
রিয়াজুল হাসান খোকন,(বাহারছড়া)::
টেকনাফ উপকূলীয় বাহারছড়া ইউনিয়ন ব্যাপক করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে বলে স্থানীয় সতেচন ও নাগরিক সমাজের আশংঙ্কা। এই জনপদে প্রতিদিন কোনো না কোন ভাবে কাঁচা আমের ভর্তি গাড়ি, কাঁচা মাছের ভর্তি গাড়ি ও কাচাঁ পানের ভর্তি গাড়ি চট্রগ্রাম, কুমিল্লাহ, নারায়গঞ্জ, ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানী হয়। আবার এখান থেকে উক্ত পন্যের ব্যবসায়ীরা তাদের কাঁচা মালের সাথে উল্ল্যেখিত এলাকা গুলোতে যাতায়াত করে। ফলে করোনা ভাইরাসের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গুলোতে বাহারছড়ার ব্যবসায়ীরা কয়েকদিন অবস্থান করার পর তারা আবার নিজ এলাকায় এসে স্থানীয় মানুষ, দোকান, ও হাট বাজারে ঘোরাফেরা করে এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
তার জন্য নিজের অজান্তে ও অচেতনতায় এক ধরণের মহামারি আকার ধারণ করতে পারে বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে এই জনপদের কিছু মানুষ ঢাকা- চট্রগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় কাজ কর্ম করে। তারাও এই মহামারী সময় এলাকাতে এসে অন্য সবার সাথে মিশে যাচ্ছে বলে খবর রয়েছে। যার জন্য সবার মাঝে এক ধরণের চাপা আতংঙ্ক বিরাজ করছে বলে স্থানীয়রা জানান। এদিকে বাইরের এলাকা থেকে বাহারছড়ায় নতুন আগত লোক গুলোর ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে জনগণ অভিহিত করলেও কার্যত প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছেনা কোনো কঠোর পদক্ষেপ। যদিওবা তাদের মোবাইল নাম্বার যোগাড় করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘর থেকে বের না হতে মানা করে দেওয়া হলেও তারা তা অমান্য করে প্রতিদিন ঘর থেকে বের হয়ে ঘোরাফেরা করছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
একটি সূত্রে জানা যায় টেকনাফ বাহারছড়ার ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদু শুক্কুর গত কিছুদিন আগে পানের সওদা করতে নারায়নগঞ্জে যায়। সেখানে এক সাপ্তাহ অবস্থান করার পর গত তিনদিন আগে এলাকাতে আসে। এলাকার মানুষদের তথ্যমতে সে নারায়নগঞ্জ থেকে আসার পর স্থানীয় দোকান গুলোতে বসে নারায়নগঞ্জে করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা তুলে ধরে এলাকার মানুষদের সামনে হিরু সাজার চেষ্টা করে। অর্থাৎ সে কোনো অসুস্থ না হয়ে বাড়ি ফিরছে এই কথা বুঝাতে চাচ্ছে সবাইকে। এলাকাবাসীরা জানান সে কথা বলার সময় কাচিঁ এবং নাক থেকে পানি ফেলতে ছিল। একদিন পর স্থানীয় প্রশাসনের একটি বাহিনী খবর পেয়ে তাকে ঘর থেকে বের না হতে মানা করে দিলেও সে মুলত তা অমান্য করে বের হয় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
আর গত দুইদিন আগে একই এলাকার আবদুল করিম নামে এক ব্যক্তি কাঁচা পান নিয়ে সওদা করতে বাহারছড়ার শামলাপুর মন্তলীয়া থেকে পাড়ি জমায় ঢাকাতে। সেখানে একদিন অবস্থান করার পর এলাকায় এসে কোনো বাধা ছাড়া ঘুরাফেরা করতে থাকে। খবর পেয়ে স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মী মোঃ সাইফুল ইসলাম করিমকে বের না হতে মানা করে দিলেও মুলত সে তা অমান্য করে প্রতিদিন দোকান ও বাজারে ঘুরতেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তাছাড়া নুরুল আলম ও তার সন্তান লেইট্রা গত একদিন আগে চট্রগ্রাম থেকে শামলাপুর জুমপাড়া এলাকায় আসার পর সবখানে ঘুরাফেরা করছে বলে অভিযোগ। আর নুরুল আলম নামক আরেক ব্যক্তিও গত একদিন আগে পবিবারের পাঁচ সদস্য সহ চট্রগ্রাম থেকে শামলাপুর মন্তলীয়া এলাকায় আসলে এক ধরনের আতংক বিরাজ করছে বলে এলাকাবাসীরা জানান। তার মধ্যে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য,ও প্রশাসনের ব্যক্তিদের খবর দেওয়া হলেও এখনো আগত লোক গুলোর ব্যাপারে কার্যত কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে যে গত কয়েকদিন আগে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরো কক্সবাজার জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু কিভাবে প্রতিদিন বিভিন্ন পণ্যের গাড়ির সাথে ব্যবসায়ীরা কক্সবাজার থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করতে পারে তা সবাইতে ভাবিয়ে তুলেছে। তারা মালের সাথে চালানে গিয়ে এলাকায় এসে সবাইকে টেনশন ও ঝুঁকিতে ফেলছে এমন অভিযোগও রয়েছে। তাই স্থানীয় জনগণ প্রশাসনকে আরো কঠোর হতে আহবান করেছেন। নাহলে এর প্রতিদান চরম নিষ্টুর ভাবে দিতে হবে বলেও তারা আশংঙ্কা প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন মুলত কৃষিপণ্য গুলো গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করার সুযোগ আছে। তবে গাড়িতে করে লোক যাওয়ার সুযোগ নেই। আবার দুর শহর থেকে কোনো পরিবার নতুন এলাকায় আসলে তাদেরও বিশেষ ব্যবস্থায় রাখা হবে। এব্যাপারে স্থানীয় আইনশৃঙ্গলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া আছে। অন্যদিকে এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া-টেকনাফ সার্কেল) নাহিদ আদনান তাইয়ান জানান কোনো ব্যক্তি কৃষি পণ্যের গাড়ি করে বাইরে শহরে যাওয়ার সুযোগ নেই। যদি কোনো ব্যবসায়ী তা করে থাকে বা এলাকায় এসে ঘুরাফেরা করে তাহলে তাদের খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাঠকের মতামত